মসুরের উৎপাদন প্রযুক্তি
মাটি
সুনিষ্কাশিত বেলে দোআঁশ মাটি চাষের জন্য উপযোগী
জমি তৈরি
জমি ৩-৪ টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করতে হয়। জমি ভালভাবে ঝুরঝুরে করে নেওয়া উত্তম।
বপন পদ্ধতি
ছিটিয়ে অথবা সারি করে বীজদ বপন করা যায়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি রাখতে হবে।
বীজের হার
বীজের হার ৩০-৩৫ কেজি/হেক্টর। ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশি দিতে হয়। তবে বারি মসুর-৩ এর বেলায় হেক্টরপ্রতি ৩৫-৪০ কেজি বীজ ব্যবহার করতে হবে।
বপন সময়
কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ) পর্যন্ত মসুর বীজ বপন করা যায়।
সারের পরিমাণ
জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি নিমণরূপ সার ব্যবহার করতে হবেঃ
সারের নাম |
সারের পরিমাণ/হেক্টর |
ইউরিয়া |
৪০-৪০ কেজি |
টিএসপি |
৮০-৯০ কেজি |
এমপি |
৩০-৪০ কেজি |
অণুজীব সার |
সুপারিশ মত |
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
সমুদয় সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে পূর্বে মসুর চাষ করা হয় নাই সেখানে প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অণুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। ইনোকুলাম ব্যবহার করলে সাধারণত ইউনিয়া সার ব্যবহার করতে হয় না।
অমত্মর্বতীকালীন পরিচর্যা
বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানি দ্বারা একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতিবৃষ্টির ফলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ
মধ্য-ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
অন্যান্য পরিচর্যা
মসুরের গোড়া পচা রোগ দমন
এ রোগের জীবাণু স্কেলেরোসিয়াম রলফসি নামক এক প্রকার ছত্রাক। গাছ আক্রামত্ম হলে পাতা ক্রমান্বয়ে হলদে রং ধারণ করে। আক্রামত্ম গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। মাটি ভিজা থাকলে গোড়ায় ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়াম ও সরিষার দানার ন্যায় স্কেলেরোসিয়াম গুটি দেখা যায়। এ জীবাণু গাছের অবশিষ্টাংশে, বিকল্প পোষক ও মাটিতে বেঁচে থাকে এবং পরবর্তী বছরে ফসল আক্রমণ করে। ভিজা স্যাঁতসেঁতে মাটি রোগ বিসত্মারের সহায়ক।
প্রতিকার
মসুরের মরিচা রোগ দমন
ইউরোমাইসিস ভিসিয়া ফেরি নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। আক্রামত্ম গাছের পাতায় বিভিন্ন আকৃতির ছোট ছোট মরিচা রংয়ের গুটি দেখা যায়। পরবর্তীতে তা গাঢ় বাদামি ও কালো রং ধারণ করে। কান্ডেও এ রকম লক্ষণ দেখা যায়। আর্দ্র আবহাওয়ায় এ রোগের প্রকোপ বেশি হয়।
প্রতিকার
মসুরের স্টেমফাইলাম ব্লাইট রোগ
স্টেমফাইলাম প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সৃষ্টি হয়। আক্রামত্ম গাছের পাতায় সাদা ছত্রাকের জালিকা দেখা যায়। দূর থেকে আক্রামত্ম ফসল আগুনে ঝলসানো মনে হয়। আক্রমণের শেষ পর্যায়ে গাছ কালচে বাদামি রং ধারণ করে। ভোর বেলায় পাতা এবং কান্ডে এক ধরনের সাদা ছত্রাক জালিকার উপস্থিতি দ্বারা সহজেই স্টেমফাইলাম ব্লাইট রোগ সনাক্ত করা যায়। বীজ, বিকল্প-পোষক, বায়ু প্রভৃতির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকার
বীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি
বীজ ভালভাবে রোদে আর্দ্রতার পরিমাণ আনুমানিক ১০% এর নিচে রাখতে হবে। তারপর টিনের পাত্র ও পলিথিনসহ চটের ব্যাগ অথবা আলকাতরার প্রলেপ দেওয়া মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস